আত্মা না বলে আসে, না বলে চলে যায়।না বলে এসে আনন্দ দেয়, কিন্চিৎ ক্ষেত্রে বেদনাও দেয়।আর না বলে চলে গেলে,শুধুই বেদনা দেয়। আত্মা ওদেহের দূরত্বে অস্তিত্ব হীনতা তৈরী হয়।আর এদের নৈকট্য অস্তিত্ব তৈরী হয়।
নদী কি কখনও তার গতিকে বলে? তুমি আর গতিময় হয়ো না, তুমি আর বহমান হয়ো না, আমার খুব কষ্ট হচ্ছে, আমাকে ছেড়ে দাও,আমাকে আমার মত থাকতে দাও,আমার মত করে পাড় গাঁথতে দাও,আমার জীবনিটা সুখের পাতায় লিখা হোক।
আর গতি বলে? ওগো নদী আমিতো তোমাকে ছন্দ দেই, সুর দেই,তাল দেই, সাগরের হাতছানি দেই।তাহলে কেন আমাকে ছাড়তে চাও ?
নদী বলে,তোমার দেয়া ছন্দ, সুর, তালে যে, হাসির সাথে কান্নাও জুড়ে থাকে, আর সাগরতো আমার অস্তিত্বের পরিসমাপ্তি ঘটায়।যেখানে আমি শেষ হয়ে যাই, সেখানে কেন নিয়ে চলো ? আর কতকাল চলবো এভাবে ? জ্ঞানী ব্যক্তির মত, গাম্ভীর্য নিয়ে গতি বলে, এর উত্তর একদিন তুমি পাবে, যেদিন সময়, ক্ষন সবকিছু থেমে যাবে চিরতরে।

তেমনি দেহ যদি বলে,ওগো আত্মা তুমি আমার মধ্যে বাসা বাঁধো কেন?গড়ছো কেন? আমার কেন বৃদ্ধি ঘটাও? বৃদ্ধি ঘটালে কেন বার্ধক্যে নেও? কেন নি:শ্বেষ করো ? কেন পাপে জর্জরিত করতে দাও? কেন রোগ, শোকে, জরায় ক্লেশ দাও? তুমি আমার মাঝে এসে আমাকে মূল্যবান করে আবার মূল্যহীন করে ছেড়ে চলে যাও অনন্তলোকে ? 

আত্মা বলে, আমিতো নির্দেশিত পথে চলি।তোমার মধ্যেইতো আমার প্রকাশ।তোমার পাপ,রোগ,শোক,জরা, ক্লেশ আমাকেও জর্জরিত করে, কষ্ট দেয়, আমিতো তোমাকে বার্ধক্যে যেতে দিতে চাই না।অনন্তলোকের পথে ফিরতে হবে বিধায় তোমাকে ফেলে আসা।কথা দিচ্ছি তোমাকে আমার মধ্যে ধারন করেই শেষ বিচারে দাঁড়াবো।।